জবা গাছের পরিচর্যা / Hibiscus Plant Care

 জবা গাছের পরিচর্যা    

 জবা গাছ বা হিবিস্কাস একটি সুন্দর ও সহজ পরিচর্যাযোগ্য ফুল গাছ। এর বিভিন্ন রঙের ফুল সারা বছর বাগানকে সজীব করে তোলে।

১.সঠিক মাটির মিশ্রণের গুরুত্ব

হিবিসকাস গাছের সুস্থ বৃদ্ধি এবং ভালো ফুলের জন্য মাটির মিশ্রণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি মাটি সঠিক না হয়, গাছের শিকড় ঠিকভাবে বাড়তে পারে না, ফলে গাছ দুর্বল হয় এবং ফুল কম দেয়।
মাটির অনুপাতসঠিক মাটি প্রস্তুতির জন্য, আপনি প্রায় ৩০% গার্ডেন সয়েল, ৩০% কম্পোস্ট এবং ৪০% বালি ব্যবহার করতে পারেনএই অনুপাত মাটিকে আর্দ্র, পুষ্টিযুক্ত এবং হালকা করে তোলে, যা শিকড়ের জন্য আদর্শ

আদর্শ মাটির উপাদান জবা বা  হিবিসকাস গাছের জন্য মাটির মিশ্রণে তিনটি প্রধান উপাদান থাকা উচিত 

গার্ডেন সয়েল (Garden Soil): এটি গাছের জন্য প্রাকৃতিক এবং প্রয়োজনীয় উপাদান সরবরাহ করে। গার্ডেন সয়েল গাছের শিকড়কে স্থিতিশীল করে এবং জল ধারণ করতে সাহায্য করে।
কম্পোস্ট (Compost): কম্পোস্ট বা জৈব সার গাছের জন্য পুষ্টির উৎস হিসেবে কাজ করে। এটি মাটির উর্বরতা বাড়ায় এবং গাছকে প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান সরবরাহ করে।
 বালি ( Sand): মাটির মধ্যে বালি মিশালে মাটির নিষ্কাশন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে গাছের শিকড় পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় এবং জলবদ্ধতার সমস্যা কমে এবংমাটি শিথিল এবং বায়ু চলাচলযোগ্য করে। এটি মাটির পুরুত্ব কমিয়ে শিকড়ের বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট জায়গা দেয়। এছাড়া মাটির শিথিলতা বাড়ায়, যা শিকড়কে সঠিকভাবে শ্বাস নিতে সাহায্য করে।

.জৈব কম্পোস্টের ব্যবহার:জৈব কম্পোস্ট গাছের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি মাটির পিএইচ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং গাছের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। আপনি কিচেন কম্পোস্ট বা অন্যান্য জৈব উপাদান ব্যবহার করতে পারেন।

.নিষ্কাশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:হিবিসকাস গাছের জন্য জল নিষ্কাশন খুবই জরুরি। যদি মাটিতে জল জমে থাকে (জলাবদ্ধতা হয়), তাহলে গাছের শিকড় পঁচে যেতে পারে। এজন্য মাটির মিশ্রণটি এমন হতে হবে যাতে এটি অতিরিক্ত জল দ্রুত বের করে দিতে পারে।

৫.মাটির পিএইচ পরীক্ষা করা: হিবিসকাস গাছ সাধারণত আলকালাইন (অ্যাসিডিক) মাটিতে ভালোভাবে বাড়ে। সুতরাং, মাটির পিএইচ পর্যবেক্ষণ করা উচিত, যাতে এটি ৬ থেকে ৭ পিএইচের মধ্যে থাকে। অতিরিক্ত অম্লীয় বা ক্ষারীয় মাটি গাছের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

৬.অতিরিক্ত সার ব্যবহার এড়ানো: হিবিসকাস গাছের জন্য অতিরিক্ত রাসায়নিক সার বা(Chemical Fertilizersব্যবহার করা উচিত নয়, কারণ এটি মাটির ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। কম্পোস্ট এবং প্রাকৃতিক উপাদানগুলোই যথেষ্ট, যা গাছের জন্য পুষ্টি সরবরাহ করবে ও এতে গাছের বৃদ্ধির জন্য পুষ্টি ঠিক থাকবে এবং মাটির স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে

৭.সঠিক জায়গা নির্বাচন:হিবিসকাস গাছ রোদ পছন্দ করে, তাই পটটি এমন জায়গায় রাখুন যেখানে দিনে অন্তত ৫-৬ ঘণ্টা সূর্যালোক পৌঁছায়। তবে, গরমে সরাসরি দুপুরের রোদ থেকে গাছকে একটু রক্ষা করা উচিত, কারণ এটি পাতার পুড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে।

৮.কীটপতঙ্গ এবং রোগ:হিবিসকাস গাছের পাতায় অনেক সময় আঁচিল বা সাদা সিটিপোক(মিলিবাগ) দেখা দিতে পারেআপনি প্রাকৃতিক কীটনাশক (Organic  Pesticides) বা কৃত্রিম কীটনাশক (Chemical Pesticides)ব্যবহার করতে পারেন

এই পরামর্শগুলোও হিবিসকাস গাছের স্বাস্থ্য এবং ফুলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণসঠিকভাবে যত্ন নিলে, আপনার হিবিসকাস গাছ একেবারে সুন্দরভাবে বেড়ে উঠবে এবং বহু ফুল দেবে!

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন